Blog

মসজিদে আকসা, পৃথিবীর বুকে দ্বিতীয় মসজিদ

বরকতময়, বরকতময় তার চারপাশ। মসজিদে আকসা বরকতময় ভূমির মসজিদ, যার চারপাশেও আল্লাহ বরকত দান করেছেন

একমাত্র মসজিদ, যেখানে আদম আলাইহিস সালাম থেকে শুরু করে আমাদের নবী পর্যন্ত সবাই একত্র হয়েছেন
মসজিদে আকসা ও বায়তুল মাকদিসের ফজিলত সম্পর্কে কুরআন ও হাদিসে প্রচুর দলিল রয়েছে। ইসলামের প্রতি বিদ্বেষ ও হিংসা পোষণকারী ব্যতীত কেউ তাতে সন্দেহ করে না। মসজিদে আকসার ফজিলত সম্পর্কে সন্দেহকারীদের যুক্তি ও দলিলগুলো মাকড়সার ঘরের চেয়েও দুর্বল। আমরা সংক্ষেপে তার আলোচনা করছি। আল্লাহর কিতাবের বাণী আমাদের জন্য যথেষ্ট। কুরআন আমাদেরকে সংবাদ দিয়েছে বায়তুল মাকদিস থেকে কাবার দিকে কেবলা পরিবর্তনের ফলে কতক বেকুবরা প্রশ্ন ও আপত্তি করবে, নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামকে কেবলা পরিবর্তনের নির্দেশ দেয়ার আগেই আল্লাহ তাকে জানিয়ে দেন। তিনি ইরশাদ করেন:
ï´¿ سَيَقُولُ ٱلسُّفَهَآءُ مِنَ ٱلنَّاسِ مَا وَلَّىٰهُمۡ عَن قِبۡلَتِهِمُ ٱلَّتِي كَانُواْ عَلَيۡهَاۚ قُل لِّلَّهِ ٱلۡمَشۡرِقُ وَٱلۡمَغۡرِبُۚ يَهۡدِي Ù…ÙŽÙ† يَشَآءُ إِلَىٰ صِرَٰطٖ مُّسۡتَقِيمٖ ١٤٢ ï´¾ [البقرة: ١٤٢] “অচিরেই নির্বোধ লোকেরা বলবে, ‘কীসে ‎তাদেরকে তাদের কিবলা থেকে ফিরাল, যার ‎উপর তারা ছিল?’ বল, ‘পূর্ব ও পশ্চিম ‎আল্লাহরই। তিনি যাকে চান সোজা পথ ‎‎দেখান”।[2]
কিবলা পরিবর্তনে আপত্তিকারী কুরআনের ভাষায় বেকুব। কারণ আল্লাহর হুকুম ও শরীয়তের ওপর সে আপত্তি করেছে। “সুফাহা” শব্দের অর্থ বিবেচনা করলে তাদের কথার উত্তর বা তাদের প্রতি ভ্রুক্ষেপ করার কোন প্রয়োজন হয় না। তবুও আল্লাহ এ সন্দেহ জিইয়ে রাখেননি, বরং দূরীভূত করেছেন, কতক অন্তরে যার উদ্রেক হয় তার উত্তর দিয়েছেন। তিনি বলেন:
قُل لِّلَّهِ ٱلۡمَشۡرِقُ وَٱلۡمَغۡرِبُۚ “বল: পূর্ব ও পশ্চিম আল্লাহরই”। অর্থাৎ হে মুহাম্মদ তাদেরকে বল: আল্লাহর জন্যই পূর্ব-পশ্চিম এবং প্রত্যেক দিকই তার মালিকানাধীন।
আমাদের নিকট মসজিদে আকসার ফজিলত প্রমাণিত।
মসজিদে আকসার মর্যাদা ও ফজিলতের ব্যাপারে সন্দেহকারীদের জওয়াব দেয়ার পূর্বে আহলে সুন্নাহ ওয়াল জামাতের নিকট মসজিদে আকসার ফজিলত ও ইসরার পবিত্র ভূমির মর্যাদা তুলে ধরব। তাহলে সত্য বের হবে ও ইসলামী নিদর্শনসমূহ স্পষ্ট জানা যাবে। নিন্মে তার বর্ণনা তুলে ধরলাম:
মসজিদে আকসা: à¦•à§à¦°à¦†à¦¨à§à¦² কারিমের বিভিন্ন আয়াতে যার উল্লেখ রয়েছে, সকল মুফাসসির যার ফজিলতের ওপর একমত। তাদের দলিল কুদস ও মসজিদে আকসা সম্পৃক্ত সূরা ইসরার শুধু প্রথম আয়াতই নয়, বরং কুরআনের অন্যান্য আয়াতও। আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
“পবিত্র মহান সে সত্তা, যিনি তাঁর বান্দাকে রাতে ‎নিয়ে গিয়েছেন আল মাসজিদুল হারাম থেকে ‎আল মাসজিদুল আকসা ‎ পর্যন্ত, যার আশপাশে ‎আমি বরকত দিয়েছি, যেন আমি তাকে আমার ‎কিছু নিদর্শন দেখাতে পারি। তিনিই সর্বশ্রোতা, ‎সর্বদ্রষ্টা”।[3]
অন্যত্র বলেন:
“আর আমি তাকে ও লুতকে উদ্ধার করে সে ‎‎দেশে নিয়ে গেলাম, যেখানে আমি বিশ্ববাসীর ‎জন্য বরকত রেখেছি”।[4]
অন্যত্র বলেন:
“আর আমি সুলায়মানের জন্য অনুগত করে ‎দিয়েছিলাম প্রবল হাওয়াকে, যা তার নির্দেশে ‎প্রবাহিত হত সেই দেশের দিকে, যেখানে আমি ‎বরকত রেখেছি। আর আমি প্রত্যেক বিষয় ‎সম্পর্কেই অবগত ছিলাম”।[5]
অন্যত্র বলেন:
“আর তাদের ও যে সব জনপদের মধ্যে আমি বরকত ‎দিয়েছিলাম সেগুলোর মধ্যবর্তী স্থানে আমি অনেক দৃশ্যমান ‎জনপদ স্থাপন করেছিলাম এবং তাতে ভ্রমণ করার ব্যবস্থা ‎নির্ধারণ করে দিয়েছিলাম। (তাদেরকে বলা হয়েছিল) ‎‘তোমরা এসব জনপদে রাত-দিন (যখন ইচ্ছা) নিরাপদে ‎ভ্রমণ কর”।[6]
অন্যত্র বলেন:
“কসম ‘তীন ও যায়তূন’ এর। কসম ‘সিনাই’ পর্বতের, কসম এই নিরাপদ নগরীর”।[7]
কতক মুফাসসির উল্লেখ করেছেন তীন দ্বারা উদ্দেশ্য শাম দেশ ও জয়তুন দ্বারা উদ্দেশ্য বায়তুল মাকদিস।
আল্লাহ তা‘আলা অন্যত্র বলেন:
“আর স্মরণ কর, যখন আমি বললাম, ‘তোমরা ‎প্রবেশ কর এই জনপদে। আর তা থেকে ‎আহার কর তোমাদের ইচ্ছানুযায়ী, স্বাচ্ছন্দ্যে ‎এবং দরজায় প্রবেশ কর মাথা নিচু করে। আর ‎বল ‘ক্ষমা’। তাহলে আমি তোমাদের ‎পাপসমূহ ক্ষমা করে দেব এবং নিশ্চয় আমি ‎সৎকর্মশীলদেরকে বাড়িয়ে দেব”।[8]
অন্যত্র বলেন:
“হে আমার কওম, তোমরা পবিত্র ভূমিতে প্রবেশ ‎কর, যা আল্লাহ তোমাদের জন্য লিখে দিয়েছেন ‎এবং তোমরা তোমাদের পেছনে ফিরে যেয়ো না, ‎তাহলে ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে প্রত্যাবর্তন করবে”।[9]
মসজিদে আকসা: à¦ªà§ƒà¦¥à¦¿à¦¬à§€à¦° বুকে দ্বিতীয় মসজিদ। আবু যর রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন:
আমি বললাম: হে আল্লাহর রাসূল জমিনে কোন মসজিদ সর্বপ্রথম নির্মাণ করা হয়েছে? তিনি বললেন: মসজিদে হারাম। তিনি বলেন: আমি বললাম: অতঃপর কোনটি? তিনি বলেন: মসজিদে আকসা। আমি বললাম: উভয়ের মাঝে ব্যবধান কত ছিল? তিনি বলেন চল্লিশ বছর। অতঃপর যেখানে তোমাকে সালাত পায়, সেখানে তা আদায় কর, কারণ এতেই ফজিলত”।[10]
মসজিদে আকসা: à¦¬à¦°à¦•à¦¤à¦®à§Ÿ, বরকতময় তার চারপাশ। মসজিদে আকসা বরকতময় ভূমির মসজিদ, যার চারপাশেও আল্লাহ বরকত দান করেছেন। আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
“পবিত্র মহান সে সত্তা, যিনি তাঁর বান্দাকে রাতে ‎নিয়ে গিয়েছেন আল মাসজিদুল হারাম থেকে ‎আল মাসজিদুল আকসা ‎ পর্যন্ত, যার আশপাশে ‎আমি বরকত দিয়েছি”।[11]
এ আয়াত সম্পর্কে বলা হয়, মসজিদে আকসার যদি অন্য কোন ফজিলত না থাকত এ আয়াত ব্যতীত তাহলেও যথেষ্ট ছিল। এখানে সকল বরকতের বর্ণনা রয়েছে। কারণ যার চারপাশ বরকতপূর্ণ, তা অবশ্যই দ্বিগুণ বরকতপূর্ণ। মসজিদে আকসাকে মসজিদে হারাম ও মসজদে রাসূল ব্যতীত অন্যান্য মসজিদের ওপর শ্রেষ্ঠত্ব দেয়াও একটি বরকত।
মসজিদে আকসা: à¦®à§à¦¸à¦²à¦¿à¦®à¦¦à§‡à¦° প্রথম কিবলা। বারা ইব্‌ন আযেব রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন:
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম ষোল অথবা সতের মাস বায়তুল মাকদিসের দিকে ফিরে সালাত আদায় করেন, তবে রালূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম পছন্দ করতেন যেন তাকে কাবার দিকে ফিরিয়ে দেয়া হয়। অতঃপর আল্লাহ তা‘আলা নাযিল করেন:
“আকাশের দিকে বারবার তোমার মুখ ফিরানো আমি অবশ্যই দেখেছি”।[12]ফলে তিনি কাবার দিকে ফিরে গেলেন।[13]বায়তুল মাকদিস থেকে কাবার দিকে কেবলা পরিবর্তনের ফলে তার মর্যাদা রহিত হয়নি, বরং তার মর্যাদা মুসলিমের অন্তর ও ইসলামী শরীয়তে যথাযথ বিদ্যমান রয়েছে।
মসজিদে আকসা: à¦ªà§ƒà¦¥à¦¿à¦¬à§€à¦° প্রথম মসজিদ কাবা থেকে এখানেই রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের ইসরা হয়েছিল। তিনি আল্লাহর দুই ঘর ও দুই কেবলার ফজিলত, মর্যাদা ও দর্শন লাভ করেন। আনাস ইব্‌ন মালেক রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন:
“আমার নিকট বুরাক আনা হল, বুরাক সাদা চতুষ্পদ জন্তু গাধার চেয়ে লম্বা ও খচ্ছরের চেয়ে ছোট। তার দৃষ্টির শেষ প্রান্তে সে পা রাখে। তিনি বলেন: আমি তাতে সাওয়ার হয়ে বায়তুল মাকদিসে পৌঁছি। তিনি বলেন: আমি তাকে সেই খুঁটির সাথে বাঁধলাম, যার সাথে নবীগণ বাঁধেন। তিনি বলেন: অতঃপর আমি মসজিদে প্রবেশ করলাম ও দুই রাকাত সালাত আদায় করলাম। অতঃপর আমি বের হলাম। আমার নিকট জিবরিল আলাইহিস সালাম একটি মদ ও একটি দুধের পাত্র নিয়ে আসলেন, আমি দুধ গ্রহণ করলাম। জিবরিল বললেন আপনি ফিতরাত গ্রহণ করেছেন। অতঃপর আমাদের নিয়ে দুনিয়ার আসমানে আরোহণ করলেন...”।[14]
মসজিদে আকসা: à¦à¦•à¦®à¦¾à¦¤à§à¦° মসজিদ, যেখানে আদম আলাইহিস সালাম থেকে শুরু করে আমাদের নবী পর্যন্ত সবাই একত্র হয়েছেন। ইতিহাসের সবচেয়ে বড় ইস্তেমা এখানেই সংগঠিত হয়েছে। ইসরার রাতে সকল নবীদের নিয়ে তিনি ইমাম হিসেবে সালাত আদায় করেন। এ থেকে প্রমাণিত হয় মসজিদে আকসা মুসলিমদের নিদর্শন, উম্মতে মুহাম্মদ সেখানে ইমামতি করবে, শেষ নবী পূর্বের সকল নবীর পবিত্র নিদর্শনসমূহের উত্তরাধিকারী এবং তার রিসালাত সকল পবিত্র ভূমিকে অন্তর্ভুক্তকারী। আরো প্রমাণিত হয় সকল পবিত্র ভূমি দীনে ইসলামের মিরাস, যার ওয়ারিশ কোন দীন হতে পারেনি।
মসজিদে আকসা ব্যতীত দুনিয়ার কোথাও সকল নবী একত্র হননি, এ থেকেও মসজিদে আকসার মর্যাদা বৃদ্ধি পায়।
ইমাম মুসলিম আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণনা করেন: রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন:
আমি হিজরে অবস্থান করছিলাম, আর কুরাইশরা আমাকে আমার ইসরা সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করছিল। তারা আমাকে বায়তুল মাকদিস সম্পর্কে কিছু প্রশ্ন করল, যা আমি ভালো করে আত্মস্থ করেনি। আমি খুব সমস্যায় পড়লাম, এরপূর্বে কখনো এরূপ সমস্যায় পড়িনি। তিনি বলেন আল্লাহ আমার সামনে মসজিদে আকসা উঁচিয়ে ধরলেন, আমি তা দেখতে ছিলাম। তারা আমাকে কোন জিনিস সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করেনি, যার সংবাদ আমি দেয়নি। আমি নিজেকে নবীদের জমাতের মধ্যে দেখেছি, দেখলাম মুসা দাঁড়িয়ে সালাত আদায় করছেন, দেখতে হালকা গড়ন ও কঠিন স্বভাবের, যেন তিনি শানুআ বংশের কেউ। আরো দেখলাম ঈসা ইব্‌ন মারইয়াম আলাইহিস সালামকে, তিনি দাঁড়িয়ে সালাত আদায় করছেন, তার সাথে অধিক মিল রয়েছে উরওয়া ইব্‌ন মাসউদ সাকাফীর। আরো দেখলাম ইবরাহিম আলাইহিস সালাম দাঁড়িয়ে সালাত আদায় করছেন, তার সাথে অধিক মিল রয়েছে তোমাদের সাথীর, অর্থাৎ তার নিজের। অতঃপর সালাতের সময় হল, আমি তাদের ইমামতি করলাম। আমি যখন সালাত থেকে ফারেগ হলাম, কেউ আমাকে বলল হে মুহাম্মদ, তিনি জাহান্নামের ফেরেশতা তাকে সালাম করুন, আমি তার দিকে ঘুরে দাঁড়ালাম, তিনিই আমাকে প্রথমে সালাম করলেন”।[15]
মসজিদে আকসা: à¦¯à¦¾à¦° ফজিলত ও শ্রেষ্ঠত্বের ঘোষণা দিয়েছেন নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম। তিনি বলেছেন মসজিদে আকসার সাথে মুসলিমের অন্তর এতটা সম্পৃক্ত হবে যে, সে চাইবে তার জন্য ছোট একটু জায়গা হোক, যেখান থেকে সে মসজিদে আকসার দিকে উঁকি দিবে, অথবা যেখান থেকে সে মসজিদে আকসা দেখবে। এতটুকু জায়গা তার নিকট দুনিয়া ও তার মধ্যবর্তী সবকিছু থেকে উত্তম হবে। আবু যর রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন:
“আমরা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের নিকট আলোচনা করলাম কোনটি উত্তম: মসজিদে রাসূলুল্লাহ না বায়তুল মাকদিস? রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন: আমার মসজিদে এক সালাত সেখানে চার সালাত থেকে উত্তম। তবে মসজিদে আকসা সালাতের জন্য উত্তম জায়গা। হয়তো কোন ব্যক্তির জন্য তার ঘোড়ার রশির সমপরিমাণ জায়গা হবে, যেখান থেকে বায়তুল মাকদিস দেখা যাবে, তার জন্য তা সমগ্র দুনিয়া থেকে উত্তম হবে। তিনি বলেন: অথবা তিনি বলেছেন: দুনিয়া ও দুনিয়ার মধ্যবর্তী সবকিছু থেকে উত্তম হবে”।[16]
মসজিদে আকসা: à¦¬à¦¿à¦œà§Ÿà§‡à¦° পূর্বে নবী সাল্লালà§
Blog Author

Written by

RECIPE REVIEWS

Login to comment