Blog

দেশে উচ্চশিক্ষার মান নিয়ে হতাশা

দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো কঠিন আর প্রতিকূল পথ পাড়ি দিতে হবে

বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়াশোনার মান নিয়ে চলছে জোর আলোচনা। তবে এ আলোচনা-সমালোচনা অবশ্য গুটিকয়েক শিক্ষক-শিক্ষার্থী, শিক্ষাবিদ আর মিডিয়ার মধ্যে সীমাবদ্ধ

উচ্চশিক্ষার মান নিয়ে বিভিন্ন সময়েই হতাশা প্রকাশ করছি আমরা। শুধু উচ্চশিক্ষা কেন, স্কুল থেকে বিশ্ববিদ্যালয় অতঃপর এমফিল, পিএইচডির মতো উচ্চতর গবেষণা সব ব্যাপারেই আমাদের নানা মহলের অস্বস্তি রয়েছে। সরল চোখে বাস্তবতার উঠানে দাঁড়িয়ে হতাশ হওয়ার পেছনে প্রামাণ্য তথ্যও দেয়া যাবে। তবে আমাদের সমস্যা হচ্ছে প্রকৃত সংকট নির্দেশ করে যদি সমালোচনা বা হতাশা ব্যক্ত করি এবং সংকটের কারণ অনুধাবন করি তাহলে এর প্রতিবিধানের পথ পাওয়া সহজ। কিন্তু বেশির ভাগ ক্ষেত্রে গভীর পর্যবেক্ষণ ছাড়া খণ্ডিত সত্যে দাঁড়িয়ে দায়িত্বশীল জায়গা থেকে হালকা সমালোচনার একটি প্রচলন দেখা যায়। এতে যেমন বিশ্ববিদ্যালয়ের মর্যাদা ক্ষুণ্ন করা হয়, অন্যদিকে দেশবাসীর সামনে ছড়িয়ে দেয়া হয় নেতিবাচক ধারণা। দেশে উচ্চশিক্ষার মান নিয়ে গড়পড়তা কথাবার্তা মাঝেমধ্যে আলোচনায় এলেও এ নিয়ে মূলত ঝড় ওঠে কিউএস র‌্যাঙ্কিং প্রকাশের পরপরই। বরাবরের মতো এবারের পরিসংখ্যানের পরেও বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়াশোনার মান নিয়ে চলছে জোর আলোচনা। তবে এ আলোচনা-সমালোচনা অবশ্য গুটিকয়েক শিক্ষক-শিক্ষার্থী, শিক্ষাবিদ আর মিডিয়ার মধ্যে সীমাবদ্ধ। সরকার, শিক্ষা মন্ত্রণালয় বা ইউজিসির কারও আছে এসব র‌্যাঙ্কিংয়ের খবর পৌঁছায় কি না, সেটাও নিশ্চিত করে বলা যায় না। তো এবারের কিউএস র‌্যাঙ্কিংয়ে সেরা ৫০০ বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকায় বাংলাদেশের একটিও নেই। অন্যদিকে কিউএস র‍্যাঙ্কিংয়ে ৫০০–এর মধ্য প্রতিবেশী ভারতের ৯টি ও পাকিস্তানের ৩টি বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে। বাংলাদেশে বর্তমানে মোট ১৬০টি সরকারি-বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আছে, যা আনুপাতিক হারে ভারত, পাকিস্তানের চেয়ে সংখ্যায় অনেক বেশি। তবু কেউ র‌্যাঙ্কিংয়ে আসতে পারেনি, উন্নতিও করতে পারেনি। এসব নিয়ে একজন উপাচার্য বলেছেন, অমুক বিশ্ববিদ্যালয়ও র‌্যাঙ্কিংয়ে নেই। আরেক উপাচার্য বলছেন, কে কী র‌্যাঙ্কিং করল, তা দেখি না। শিক্ষার মান বাড়ানোর দিকে নজর দিচ্ছেন তিনি। এই উপাচার্যের বক্তব্য ইতিবাচক। বেশ কয়েক বছর ধরে উচ্চশিক্ষার মান ও বিশ্ব র‌্যাঙ্কিং নিয়ে শিক্ষাঙ্গনে তোলপাড় শুরু হলেও কার্যকর কোনো উদ্যোগ দেখা যায়নি। শতবর্ষ পেরিয়েও প্রাচ্যের অক্সফোর্ড বলছে তারা এখন শিক্ষার মানোন্নয়নে মনোযোগ দিতে চান। কতটা বদলাবে, কতটাই–বা সম্ভব, সেটা সময় ঠিক বলে দেবে। যাহোক, কিউএস র‍্যাঙ্কিংয়ের ভিত্তি হচ্ছে আটটি সূচক। সূচকগুলো হলো একাডেমিক খ্যাতি, শিক্ষক-শিক্ষার্থী অনুপাত, শিক্ষকপ্রতি গবেষণা-উদ্ধৃতি, আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী অনুপাত, আন্তর্জাতিক শিক্ষক অনুপাত, চাকরির বাজারে সুনাম, আন্তর্জাতিক গবেষণা নেটওয়ার্ক ও কর্মসংস্থান। এসব সূচকের আলোকে এ দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর দিকে তাকালে যা পাই তাই বলে দিচ্ছে কতটা কঠিন আর প্রতিকূল পথ পাড়ি দিতে হবে।

Blog Author

Md Abdul Gaffer

Written by

RECIPE REVIEWS

Login to comment