ত্যাগ, উৎসর্গ, বিসর্জনই কুরবানী
কোরবানির বিশাল নিয়ামতের মূল কারণ হলো- বান্দার পক্ষ থেকে মহান আল্লাহ তায়ালার প্রতি মুহাব্বতের এক প্রোজ্জ্বল নির্দশন পরিলক্ষিত হয়
আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেন- আপনি আপনার প্রতিপালকের প্রতি সালাত আদায় করুন এবং কুরবানি করুন
কুরবানী শব্দটির মূল শব্দ হচ্ছে কুরবানুন, যার আভিধানিক অর্থ হলো নৈকট্য অর্জন করা। আর কুরবানী শব্দটির অর্থ ত্যাগ, উৎসর্গ, বিসর্জন, আল্লাহর রাস্তায় পশু জবেহ করা। পরিভাষায় বলা হয়- কোন পশু জবেহ করার মাধ্যমে অথবা আল্লাহর রাস্তায় উৎসর্গ বা সদকা করা৷ নিজের প্রিয় বস্তুকে আল্লাহর রাস্তায় বিসর্জন করার মাধ্যমে আল্লাহর নৈকট্য হাছিল করা।
এক কথায়- ইবাদতের মাধ্যমে আল্লাহ তায়ালার সন্তুষ্টি অর্জনের নামই কুরবান। মুসলমানরা প্রতি বৎসর জিলহজ্জ মাসের ১০, ১১, ১২ তারিখের যে কোন দিন সূর্যাস্তের পূর্বে আল্লাহ তায়ালার নামে বিভিন্ন প্রকার হালাল পশু কুরবানী দিয়ে থাকে৷
হযরত ইবরাহিম আলাইহিস সালামের কুরবানি:- হযরত ইবরাহিম আলাইহিস সালাম এর ১৩, ১৪ বছর বয়সে কুরবানি বিষয়ে ইংগিত দিয়ে আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেন- যখন হযরত ইসমাঈল আলাইহিস সালাম পিতার কার্যক্রমে সহায়তা করার মত বয়সে উপনিত হলেন- তখন হযরত ইবরাহিম আলাইহিস সালাম প্রিয় পুত্রকে সম্ভোধন করে বলেন, হে আমার প্রিয় পুত্র! আমি স্বপ্নে দেখেছি, আমি তোমাকে জবেহ করেছি। এতে তোমার মন্তব্য কি? পুত্র বললেন, হে আমার সম্মানিত পিতা! আপনি যে বিষয়ে আদিষ্ট হয়েছেন তা শীঘ্রই বাস্তবায়ন করুন। ইনশাআল্লাহ আপনি আমাকে ধৈর্যশীলদের মাঝে পাবেন। ( সূরা সাফফাত:১০২)
কুরবানি যার ওপর ওয়াজিব:- স্বাধীন ও মুকিম ব্যক্তি যিনি মালেকে নেসাব। অর্থাৎ মানুষের মৌলিক চাহিদা ব্যতিত সাড়ে সাত ভরি স্বপ্ন বা সাড়ে বায়ান্ন তোলা রৌপ্য অথবা সমমূল্য অর্থ বা ব্যবসার মালিক হওয়া।
কুরবানি যাদের ওপর ওয়াজিব নয়:- নাবালেগ ও পাগল নেসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক হলেও তাদের উপর কুরবানি ওয়াজিব নয়। যদি তাদের অভিভাবক তাদের পক্ষ থেকে কুরবানি দিলে সহিহ বলে। মুসাফিরের জন্য কুরবানি ওয়াজিব নয়।
কোরবানির সময়:- জিলহজ্জ মাসের ১০ হতে ১২ তারিখের সূর্যাস্তের আগে পর্যন্ত। অর্থাৎ তিনদিন দুইরাত। এর আগেই নেসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক হলেই কুরবানি ওয়াজিব। ( রদ্দুল মুহতার ৬/৩১২)